ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন

আপনারা কি ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন ও হিপনিক জার্ক থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে চান? ঘুমের মধ্যে সবাই বেহুশ থাকে, তাই ঘুমের মধ্যে কি ঘটে তা কেউ বুঝতে পারে না, ঘুমের মধ্যে শরীর অবশ হয়ে যায়। অজান্তেই ঘুমের মধ্যে মুখ দিয়ে লালা পড়া ও শরীর দোলে কেন সে বিষয়ে জানবো। সেই সাথে জানবো ঘুমের মধ্যে বোবা ধরে কেন বা ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন সে সম্পর্কে। 
তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, রাতে ঘুমানোর সময় দম আটকে যায় কেন এবং ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন সে সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন

ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন| শরীর দোলে কেন

আজকের আর্টিকেলে আমরা ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন বা শরীর দোলে কেন সে বিষয়ে জানবো। ঘুমের মধ্যে শরীর কেপে ওঠা একটা জটিল প্রক্রিয়া। এটা কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে দেখা লাগবে যে সমস্যা আপনার আছে কি না? রোগ হিসেবে এটা নাও থাকতে পারে এটা মনে রাখবেন। শরীরে টিটেনাসের কারণে খিচুনি হয়ে থাকে। তবে ঘুমের মধ্যে শরীর কাপার প্রধান কারণ হল কোন পরিবেশে আপনি ঘুমাচ্ছেন এবং কোন বিষয়ের প্রতি আপনার স্নায়ু সংবেদনশীল সেটার উপর।

আর প্রতিবর্ত ক্রিয়া হচ্ছে এই কেঁপে ওঠাটি যা স্পাইনাল কার্ড এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। যেমন মনে করেন, ঘুমের মধ্যে মশা কামড় দিলে কিংবা কানের পাশে ভনভন করে যদি শব্দ করে, হ্যালোজিনেশনের প্রতি আপনার স্নায়ু সংবেদনশীল হয়ে যায় তাহলে অন্তঃকর্ণের পেরিলিম্ফের সংকেত নিউরন গ্রহণ না করে স্পাইনাল কার্ড গ্রহণ করার মাধ্যমে সাড়া দিয়ে থাকে যেটা আপনি না বুঝতে পেরে কেঁপে উঠে ভয়ের প্রতি সারা দিয়ে থাকেন।

আরো পড়ুনঃ আদা খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা

আবার খালি গায়ে শীতল পরিবেশে ঘুমালে এমনটা হয়ে থাকে। কেননা, ঘুমের মধ্যে শরীর শীতল হয়ে যাবার পর ত্বক পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে হরমোনের সারা পাবার পর অতিরিক্ত তাপ ছেড়ে দেয়া রোধ করার জন্য সংকুচিত হয়। এরকম অবস্থাতে আপনার মনে হতে পারে যে ঘুমের মধ্যে কেউ আপনার বুকে চাপ দিচ্ছে। একে অনেকেই বোবা ভূতের কাজ বলে মনে করে থাকে। সেই সময় সৃষ্টি হয় ভয়ের উদ্রেক এবং শরীর কেঁপে ওঠে। তাই মনকে সব সময় শান্ত ও হাসিখুশি রাখলে দেখবেন এগুলো আস্তে আস্তে কমে যাবে।

হিপনিক জার্ক থেকে মুক্তির উপায়

প্রথমে আমরা হিপনিক জার্ক আসলে কি সে সম্পর্কে জানব। হিপনিক জার্ক হচ্ছে একটা স্বাভাবিক ঝাকুনি। যদিও এটা ঘুমিয়ে পড়া এবং অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতার একটা অংশ। আপনার জীবন থেকে হিপনিক জার্ক সম্পূর্ণরূপে দূর করা অসম্ভব। হিপনিক জার্ক নামটা শুনতে জটিল মনে হলেও এটা কিন্তু আসলে কোন রোগ নয়। গবেষণায় জানা গেছে, প্রায় ৭০% মানুষ কমপক্ষে একবার হলেও তাদের জীবনে এই হিপনিক জার্ক এর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।

অনেক মানুষ প্রশ্ন করে থাকে ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন। এই হিপনিক জার্ক এর কারণে ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে। এখন আমরা হিপনিক জার্ক থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানব।

  • হিপনিক জার্ক থেকে মুক্তি পেতে হলে ভালো ঘুমের অভ্যাস করতে হবে।
  • আপনার স্ট্রেস কিংবা মানসিক চাপ বেশি থাকলে তা কমাতে হবে।
  • হিপনিক জার্ক থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে দৈনিক ব্যায়াম করা।
  • ক্যাফেইন খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে।
  • অ্যালকোহল ও নিকোটিন থেকে এড়িয়ে চলতে হবে।

ঘুমের মধ্যে মুখ দিয়ে লালা পড়া

মুখ দিয়ে কি শুধু শিশুদেরই লালা পড়ে? আসলে বড় ছোট বলে না সকলের মুখ থেকেই লালা উৎপন্ন হয়। মুখ দিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে লালা পড়তে পারে, হোক সেটা ছোট কিংবা বড়দের। বিশেষ করে ঘুমের মধ্যে মুখ দিয়ে লালা পড়া ও বালিশ ভিজে যাওয়া অনেকেরই হয়ে থাকে। এই বিষয়টা বিব্রতকর মনে হলেও এটা হেলাফেলার নয়। কেননা, লালা পড়া সমস্যাটা শারীরিক বিভিন্ন অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ঘ্রাণ শক্তি কমে গেলে পাঁচটি করণীয়

আবার শোয়ার ধরন স্বাভাবিকভাবে পরিবর্তন হলেও ঘুমের মধ্যে মুখ দিয়ে লালা পড়তে পারে। আসলে মুখ দিয়ে লালা পরে কেন চলুন সে সম্পর্কে জেনে নিই। প্রতিদিন এক লিটারেরও বেশি লালা মানব দেহ উৎপাদন করে থাকে। লালা গ্রন্থির মাধ্যমে এটা উৎপাদিত হয়। আমরা জেগে থাকা অবস্থায় লালা পড়তে দেইনা। সাধারণত সেটা গিলে ফেলা হয়ে থাকে। পরক্ষণে আবারো রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে লালা উৎপাদিত হয়।

কিন্তু ঘুমের মধ্যে যেহেতু আমরা লালা গিলে ফেলতে পারি না তাই মুখের মধ্যে লালা জমতে শুরু করে থাকে। সেজন্য ঘুমের মধ্যে মুখের ভেতরে থাকা লালা ঠোঁটের কোণ দিয়ে বাইরে ঝরে পড়ে। আবার বিশেষজ্ঞদের মত অনুসারে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে ঘুমের ভুল অবস্থানের কারণে মুখ দিয়ে লালা পড়ে। সেজন্য ঘুমের অবস্থান প্রথমত পরিবর্তন করা লাগবে। পেটের ওপর নয় বরং পিঠে ভর করে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। তাহলে মুখের মধ্যে লালা জমে থাকতে পারবে না।

ঘুমের মধ্যে শরীর অবশ| ঘুমের মধ্যে বোবা ধরে কেন

হাত পা ঘুমের মধ্যে স্থির হয়ে যায়। সে সময় কথা বলা তো দূরে থাক, পাশে যদি কেউ থাকে তাহলে তাকে যে ডাকবে সেরকম ক্ষমতা ও হয় না। ব্যাপারটিকে অনেকেই ভূতে ধরা, নিশির ডাক বলে মনে করে থাকেন। আসলে সত্যিই কি কাউরে ভুতে ধরে নাকি এসব অন্য কিছু? ডাক্তারি ভাষায় এটাকে স্লিপ প্যারালাইসিস বা ঘুমের মধ্যে পক্ষাঘাত বলা হয়ে থাকে। স্লিপ প্যারালাইসিস হচ্ছে এমন একটা অবস্থা যেখানে কিছুক্ষণের জন্য ব্যক্তির ঘুমের মধ্যে শরীর অবশ হয়ে যায়।

আরো পড়ুনঃ সকালে ব্যায়াম করার ১০ টি উপকারিতা

নাড়াচড়া করা তো দূরের কথা, কাউকে যে ডাকবে সেরকম কোন উপায় ও পাইনা। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। এই সময় রোগীর মনে বিভিন্ন ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়ে থাকে। এমনটা কেন হচ্ছে সেটা ভেবে অনেকে ভয় পেতে থাকে। চলিত ভাষায় এটাকে ঘুমের মধ্যে বোবা ধরা বলা হয়ে থাকে। এখন অনেকেই বলে ঘুমের মধ্যে বোবা ধরে কেন? গবেষণায় দেখা যায় যে, কম বয়সী বিশেষ করে ২২ - ৩৫ বছর বয়সে মানুষদের ভিতরে এ ধরনের সমস্যাগুলো বেশি লক্ষ্য করা যায়।

রাতে ঘুমানোর সময় দম আটকে যায় কেন

আমরা এখন রাতে ঘুমানোর সময় দম আটকে যায় কেন সে বিষয়ে জানব। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ঘুমের মধ্যে কিছু সময়ের জন্য দম আটকে যাওয়াকে বলে স্লিপ অ্যাপনিয়া। চিকিৎসকরা মনে করেন যে এই রোগটা একটা মানুষের জন্য গুপ্তঘাতক। ঘুমের মধ্যে শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া সবচাইতে সাধারণ ধারণ অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়াকে ভারতীয় মিউজিশিয়ান বাপ্পি লাহিড়ীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়ে থাকে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষেরই এই রোগ সম্পর্কে ধারণা কম রয়েছে। এই রোগে ভুগে থাকলেও অনেক সময় সেই ব্যক্তি এর রোগ সম্পর্কে বুঝতে পারে না। ঢাকায় চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশ ও স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে।

শেষ কথাঃ ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন

ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন ঘুমের মধ্যে বোবা ধরে কেন ঘুমের মধ্যে মুখ দিয়ে লালা পড়া ও হিপনিক জার্ক থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোষ্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন সে সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।

আজ আর নয়, ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন সে সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই ঘুমের মধ্যে শরীর কাপে কেন সে সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url