ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় - ঠান্ডা এলার্জি হলে করণীয়

ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করার জন্য সকলেরই জেনে রাখা দরকার। অনেকেরই ঠান্ডা এলার্জির মতো সমস্যা হতে দেখা যায়, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই আমরা ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় জানিনা। তাই আজ এই পোস্টের মাধ্যমে ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় ও ঠান্ডা এলার্জি হলে করণীয় কি তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। 
হাঁপানির সমস্যা আছে এমন ব্যক্তিদের ঠান্ডা এলার্জি হলে অধিক শ্বাসকষ্ট হতে দেখা যায়। ঠান্ডা এলার্জি পুরোপুরি দূর করার কোন উপায় না থাকলেও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করলে এই সমস্যা থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ পাওয়া যায়। তাই আজ এই পোস্টটি থেকে আপনারা ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায়, ঠান্ডা এলার্জি হলে করণীয়, ঠান্ডা এলার্জির চিকিৎসা, ঠান্ডা এলার্জি থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন, ঠান্ডা এলার্জি রোগের ঔষধের নাম ইত্যাদি বিষয়সমূহ জেনে নিতে পারবেন। 

পোস্ট সূচিপত্র - ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় - ঠান্ডা এলার্জি হলে করণীয় কি 

ঠান্ডা এলার্জির লক্ষণ ও কারণ

আমাদের অনেকেরই নাক বন্ধ হওয়া, নাকে পানি আসা অথবা সর্দি লাগার মত ঘটনা ঘটে থাকে। হয়ে থাকে এটি যতটা না সর্দি ততটা ঠান্ডা এলার্জির কারনে হয়ে থাকে। যদি আপনি হাঁচি-কাশির জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে যান তবে বুঝতে হবে এটি ঠান্ডা এলার্জির লক্ষণ। যদি দীর্ঘদিন খুশখুশে কাশি থাকে তবে তা ঠান্ডা এলার্জির একটি প্রধান লক্ষণ। যাদের শরীরের রক্তে এলার্জি পরিমাণ বেশি তাদের ঠান্ডা এলার্জি হতে বেশি দেখা যায়। এছাড়াও ঠান্ডা এলার্জির আরো লক্ষণ রয়েছে।

ঠান্ডা এলার্জি হলে চোখ ফুলে যেয়ে চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে পারে। শীতকালে ঠান্ডা আবহাওয়ায় প্রধানত ঠান্ডা এলার্জি দেখা দেয়। বিভিন্ন পশু-পাখির লোম, কসমেটিকস সামগ্রী, গাড়ির ধোঁয়া, রাস্তার ধুলাবালি, বিভিন্ন এলার্জিক খাবার যেমন: ইলিশ মাছ, বোয়াল মাছ, চিংড়ি ইত্যাদি মানবদেহে ঠান্ডা এলার্জির সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং, এই ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় ও ঠান্ডা এলার্জি হলে করণীয় কি তা সকলেরই জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। 

ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় | ঠান্ডা এলার্জি থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন

ঠান্ডা এলার্জিতে আক্রান্ত শরীর বেশ কষ্টদায়ক অবস্থার সৃষ্টি করে। কারো এলার্জির সমস্যা থাকলে তা পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়। সে কারণেই ডাক্তাররা বলে থাকেন এলার্জি নির্মূল করার চেয়ে তা প্রতিরোধ করা উত্তম। 
  1. ভিটামিন সি খাওয়া: ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কেননা ভিটামিন সি তে রয়েছে অ্যান্টি এক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি গুণাগুণ যা ঠান্ডা এলার্জি তথা এলার্জিক রাইনাটিস প্রতিরোধে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। অতএব, ঠান্ডা এলার্জি দূর করতে বেশি বেশি ভিটামিন সি যুক্ত সবুজ ফলমূল খেতে পারেন।
  2. পেটাসাইটস: পেটাসাইটস হলো সূর্যমুখী প্রজাতির একটি উদ্ভিদ, যার নির্যাস অ্যান্টিহিস্টামিনের মতো কাজ করে থাকে। তাই পেটাসাইটসের নির্যাস দ্বারা ঠান্ডা এলার্জির মতো সমস্যা দূর করা সম্ভব। 
  3. ব্রোমেলেইন: ব্রোমেলেইন একটি এনজাইম যা ন্যাচারাল এ্যান্টিহিস্টামিন হিসাবে কাজ করে। ব্রোমেলেইনের অ্যান্টি অ্যালার্জিক গুণ রয়েছে যা ঠান্ডা জনিত এলার্জি, হাঁপানি প্রভৃতি প্রতিরোধ করে।
  4. ধুলাবালি এড়িয়ে চলা: ঠান্ডা এলার্জি দূর করতে চাইলে যত সম্ভব ধুলাবালি এড়িয়ে চলতে হবে। রাস্তাঘাটে ধুলাবালি, গাড়ির কালো ধোঁয়া থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। 
  5. খাবারের সাথে ঘি খাওয়া: নিয়ম করে খাবারের সাথে কি খেলে ঠান্ডা এলার্জি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। 
  6. কালোজিরা ও মধু: কালোজিরা সকল রোগের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে থাকে। অনেকে নিয়মিত কালিজিরা খেয়ে ঠান্ডা এলার্জি থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তাই প্রতিদিন ঘুমানোর পূর্বে কালোজিরাতে মধু মিশিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন। আশা করি ঠান্ডা এলার্জি দূর হয়ে যাবে। 

ঠান্ডা এলার্জি হলে করণীয় | ঠান্ডা এলার্জি হলে কি করবেন তা প্রতিরোধে 

প্রিয় বন্ধুরা আপনার ইতোমধ্যে ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে ফেলেছেন। তাহলে এবার চলুন ঠান্ডা এলার্জি হলে করনীয় কি অথবা ঠান্ডা এলার্জি হলে কি করবেন তা প্রতিরোধে সেটি জেনে নেওয়া যাক। 
  • যথা সম্ভব অপরিষ্কার ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ এড়িয়ে চলুন কেননা এমন পরিবেশ এলার্জির জন্ম দেয়। 
  • ঘরবাড়ি ঝাড়ু দেওয়া অথবা পরিষ্কার করার সময় মুখে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। কারণ ঘর পরিষ্কার করার সময় অনেক রোগ-জীবাণু নাক দিয়ে প্রবেশ করে এলার্জি সৃষ্টি করে। 
  • মশার কয়েল এড়িয়ে চলুন। মশার কয়েলের ধোঁয়া নাক দিয়ে যেন প্রবেশ না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। 
  • ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। ঠান্ডা এলার্জির অন্যতম প্রধান কারণ ঠান্ডা খাবার খাওয়া। তাই সকল প্রকার আইসক্রিম, কোল্ড-ড্রিংকস এড়িয়ে চলুন।
  • শীতকালে লেপ, তোষক, বালিশ ইত্যাদি রোদের দেওয়ার পর ব্যবহার করুন। 
  • আপনার ঘর, আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসে যেন ছারপোকা বাসা বাঁধতে না পারে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখুন। 
  • চিংড়ি, ইলিশ মাছ, গরুর মাংস, হাঁসের ডিম ইত্যাদি যেসকল খাবার খেলে এলার্জি সৃষ্টি হয় সে সকল খাবার পরিহার করুন। 
  • ঠান্ডা এলার্জি হলে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় করে নাকে নিশ্বাস টেনে ধরে আবার তা ছেড়ে দিবেন।
  • আপনার যে এলার্জি সমস্যা রয়েছে এটি কখনো ভাববেন না। কারণ অনেক সময় মানসিক সমস্যার কারণে এলার্জি সৃষ্টি হয়।

ঠান্ডা এলার্জি রোগের ঔষধের নামসমূহ 

ঠান্ডা এলার্জি একটি অসহ্যকর জটিল সমস্যা। যা অনেক সময় দূর করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। আপনারা ইতোমধ্যে ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় ও ঠান্ডার এলার্জি হলে করণীয় বিষয়সমূহ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। এবার চলুন ঠান্ডা এলার্জি রোগের ঔষধের নামসমূহ জেনে নিই।
  • ঠান্ডা এলার্জি রোগের প্রবণতা বেশি হলে ডাক্তাররা সাধারণত মন্টিলুকাস্ট সোডিয়াম জাতীয় ওষুধ সেবন করতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এ ওষুধ দিনে অন্তত একবার ১০ গ্রাম খেলে ঠান্ডা এলার্জি কমে যায়।
  • এছাড়াও ঠান্ডা লাগছে আরো কিছু কার্যকরী ঔষধের নাম রয়েছে সেগুলো হলো: ১) মন্টিলুকাস্ট ১০ গ্রুপের ঔষধ যেমন: মোনাস, মনটিন, মনটেলা ২) হিস্টাসিন ট্যাবলেট ৩) প্রোসেট ৪) নাকের স্প্রে হিসাবে এভাস্প্রে ও জেলটাস।

শেষ কথা - ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় | ঠান্ডা এলার্জি হলে করণীয় 

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনারা ঠান্ডা এলার্জি দূর করার উপায় ও ঠান্ডা এলার্জি হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তৃত ধারণা পেয়েছেন। যদি এই উপায়গুলো যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি মেনে অনুসরণ করেন তবে ঠান্ডা এলার্জি থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ পাবেন বলে আশা করা যায়। পোস্টটি পড়ে উপকৃত হলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। আরো নিত্যনতুন স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। @23891

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url