এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ যদি আপনি জেনে রাখেন, তাহলে প্রাকৃতিক ভেষজ গুণসম্পন্ন এই উদ্ভিদটি আপনার অনেক উপকারে আসতে পারে। নিচে এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। চলুন দেখে নেয়া যাক, এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।
ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ এলোভেরা শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। সঠিক নিয়মে যদি আপনি অ্যালোভেরা খেতে পারেন সেক্ষেত্রে নানাবিধ রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবেন। মনোযোগ সহকারে যদি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে এলোভেরার যাবতীয় উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। 

অ্যালোভেরার অনেক উপকারিতা থাকলেও এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে। তাই এলোভেরার গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার পাশাপাশি এর অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে ও আলোকপাত করা হবে। আশা করি এই আর্টিকেলটিতে উল্লেখিত তথ্য গুলো আপনার উপকারে আসবে। আসুন তাহলে দেখে নেয়া যাক, এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত। 

এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রাচীন কাল থেকেই এলোভেরা বিভিন্ন রোগের কার্যকর ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সঠিক নিয়মে এলোভেরা ব্যবহার কিংবা সেবন করার মাধ্যমে বহু রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিশেষ করে এলোভেরা কে প্রাকৃতিক প্রসাধনী বলা হয়। সৌন্দর্য চর্চায় এলোভেরার বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া এলোভেরার শরবত গরমের দিনে খুবই প্রশান্তিদায়ক। 
যাইহোক, এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন। তো দেরি না করে আসুন দেখে নেই, এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 

এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা:
  • ত্বকের যত্নে: প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের যত্নে এলোভেরা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। বর্তমান সময়ের রূপচর্চার অন্যতম অনুষঙ্গ হলো অ্যালোভেরা। আপনি যদি অন্যান্য কেমিক্যাল জাতীয় প্রসাধনী ব্যবহার করেন তাহলে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আপনার ত্বকে পড়তে পারে। পক্ষান্তরে এলোভেরা ব্যবহার করলে এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। আর এ কারণেই দিন দিন ত্বকের যত্নে এলোভেরার ব্যবহারের বৃদ্ধি পাচ্ছে। 
  • সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করে: বাইরে বের হওয়ার সময় যদি আপনি ত্বকে এলোভেরার জেল ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে আপনার ত্বক সুরক্ষিত থাকবে। কেননা এলোভেরা জেল সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করে। 
  • চুলের যত্নে: খুশকি নিরাময়, চুল পড়া রোধ এবং চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দূর করা সহজ চুলের আরো বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এলোভেরা জেল খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি যদি নিয়মিত কিছুদিন চুলে এলোভেরার জেল ব্যবহার করেন তাহলে আশা করা যায় ভালো ফলাফল পাবেন। 
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: এলোভেরা প্রসাধনি হিসেবে ব্যবহার করার পাশাপাশি তা খাওয়াও যেতে পারে। বিশেষ করে আপনি যদি নিয়মিত কিছুদিন পরিমিত মাত্রায় এলোভেরা জেল খান সেক্ষেত্রে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। 
  • প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: আপনি যদি অ্যালোভেরা খান, তাহলে তা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে। আর এ কারণেই ডাক্তারগণ মাঝে মাঝে এলোভেরার শরবত খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 
  • ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে: শরীরের যেকোনো ধরনের কত নিরাময় করার ক্ষেত্রে এলোভেরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর তাই আপনার শরীরে কোথাও যদি ক্ষত থেকে থাকে তাহলে আপনি সেই ক্ষতস্থানে এলোভেরার জেল ব্যবহার করতে পারেন। এবং এর পাশাপাশি এলোভেরা জেল খেতে পারেন। এতে করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার ক্ষত নিরাময় হবে। 
এলোভেরা খাওয়ার অপকারিতা:
  • এলার্জির প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে: আপনার যদি অ্যালার্জিজনিত সমস্যা থেকে থাকে তাহলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এলোভেরা ব্যবহার করার ফলে বা খাওয়ার ফলে এলার্জির প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। তাই এই ধরনের সমস্যা থাকলে অবশ্যই আপনার উচিত হবে এলোভেরা ব্যবহার না করা। 
  • গর্ভবতী এবং ব্রেস্ট ফিডিং নারীদের জন্য উপযোগী নয়: এলোভেরা অনেক ভেষজ গুণসম্পন্ন হলেও  তা গর্ভবতী নারী এবং ব্রেস্ট ফিডিং নারীদের জন্য উপযোগী নয়। কেননা এলোভেরা খেলে তার গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতির কারণ হতে পারে। আর যদি ব্রেস্ট ফিডিং নারী হন এলোভেরা খান সেক্ষেত্রে দুধ শুকিয়ে যেতে পারে। তাই গর্ভবতী এবং ব্রেস্ট ফিডিং নারীদের উচিত হবে এলোভেরা এড়িয়ে চলা।
  • সংক্রমণ হতে পারে: আপনি যদি এলোভেরা ভালোভাবে পরিষ্কার না করে খান কিংবা ব্যবহার করেন সে ক্ষেত্রে কিন্তু সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এলোভেরা ব্যবহার করার পূর্বে বা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবং পরিপূর্ণভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। 
  • অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালোভেরা খেলে ডায়রিয়া হতে পারে: আপনি যদি অত্যধিক মাত্রায় এলোভেরা খান সেক্ষেত্রে পেট খারাপ হতে পারে। তাই অবশ্যই আপনাকে নির্ধারিত মাত্রায় এলোভেরা খেতে হবে। 

এলোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম

এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে আশা করি বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। নিচে এলোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে। আপনি যদি এলোভেরা ব্যবহার করে উপকৃত হতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট নিয়মে এলোভেরা ব্যবহার করতে হবে। 

অ্যালোভেরা ব্যবহার করার নির্ধারিত নিয়ম রয়েছে। যেভাবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে আপনি অধিক উপকার পাবেন, সে বিষয় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা। নিম্ন বর্ণিত ব্যবহারের নিয়ম সমূহ যদি আপনি যথাযথভাবে অনুসরণ করেন তাহলে আশা করা যায় এলোভেরা ব্যবহার করে অধিক উপকার পাবেন। তো চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক, এলোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 
  • অ্যালোভেরা জুস।
  • সাপ্লিমেন্টস।
  • ফেস মাস্ক।
  • হেয়ার কন্ডিশনার।
  • মেকাপ রিমুভার।
  • মাউথ ওয়াশ।
  • টুথপেস্ট।

এলোভেরা খাওয়ার নিয়ম

এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে ইতোমধ্যেই উপরে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আর্টিকেলদের এই অংশে এলোভেরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। ব্যবহার করার পাশাপাশি নির্ধারিত নিয়মে অ্যালোভেরা খাওয়াও যেতে পারে। 

যে সকল নিয়ম অনুসরণ করে এলোভেরা খেলে আপনি অধিক উপকার পাবেন সেই নিয়ম সমূহ নিচে তুলে ধরা হলো। বহু গুণে গুণান্বিত এলোভেরা জেল বিভিন্ন মোক্ষম লক্ষণ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর এ কারণেই সারা বিশ্বেই এলোভেরা জেল ঔষধ হিসেবে খাওয়া হয়ে থাকে। 
দিনের যেকোনো সময় এলোভেরা খাওয়া যায় তবে রাত্রে ঘুমানোর পূর্বে এবং সকালে খালি পেটে খেলে অধিক উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও আপনি গরমের দিনে যেকোনো সময় জুস হিসেবে এলোভেরা খেতে পারেন। এলোভেরার জুস তৈরি করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে এলোভেরার পাতাগুলো ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে। এরপরে সেখান থেকে জেলগুলো বের করে একটি পাত্রে রেখে দিতে হবে।

এলোভেরা জেলের সাথে ঠান্ডা পানি, পরিমাণ মতো চিনি মিশ্রিত করে ফ্রিজে রেখে দিন। এরপরে যখন ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন পরিবেশন করুন। এই নিয়মে যদি আপনি এলোভেরা জেল পান করেন, তাহলে তৎক্ষণাৎ গরম থেকে মুক্তি পাবেন। এবং এর পাশাপাশি বিভিন্ন শারীরিক উপকার হবে। 

উপসংহার

অ্যালোভেরার যে সকল উপকারিতা রয়েছে, সেই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে।এর পাশাপাশি এলোভেরার উপকারিতা সমূহ সম্পর্কে ও আলোকপাত করা হয়েছে। তাই আপনি যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই এলোভেরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url