যোহরের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফযিলত জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম। আপনারা যারা জোহরের নামাজ সম্পর্কে জানতে চান এবং যোহরের নামাজ কিভাবে আদায় করতে হয় এর ফজিলত কি কি সেগুলো জানতে চান তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি লিখা হয়েছে।দয়া করে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং আশা করি আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তরগুলি পেয়ে যাবেন।
নামাজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হলো নামায। নামাজের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রভুর প্রশংসা ও তাসবিহ করি এবং তার কাছে ক্ষমা, দয়া ও শান্তি কামনা করি। আজ আমরা বিশেষভাবে যোহরের নামাজ সম্পর্কে আলোচনা করবো।
আমরা জানবো যোহরের নামাজ এর সময়, কত রাকা্ত, এর পড়ার নিয়ম ও এর ফযিলত সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আমরা জোহরের নামাজের যাবতীয় নিয়ম কানুন জেনে নিই।
যোহরের নামাজ কেন পড়তে হয়
আমাদের প্রত্যেকদিনের পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের মধ্যে যোহরের নামাজ হলো দিনের দ্বিতীয় ফরজ নামাজ। এটি দুপুরের সময় আদায় করতে হয়, যখন সূর্য পূর্ণ উজ্জ্বলতায় থাকে। যোহরের নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি, কারণ এটি মুসলমানদের জীবনের একটি মৌলিক নিয়ম।
যোহরের ওয়াক্ত যখন হয় তখন আমরা সকলে আমাদের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে অত্যন্ত ব্যস্ত থাকি। আর এই ব্যস্ততার মাঝে যখন আমরা যোহরের নামাজ আদায় করি এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করি তখন আল্লাহ তাআলা বান্দাদের উপর অনেক খুশি হন এবং ক্ষমা করেন।
যোহরের নামাজের সময়
যোহরের নামাজ সাধারণত সূর্য মাঝ আকাশে পৌঁছানোর পর শুরু হয় এবং আসরের ওয়াক্তের পূর্ব পর্যন্ত আদায় করা যায়। অর্থাৎ, যোহরের নামাজের সময় হচ্ছে:
আযানের সময়: সূর্য মাঝ আকাশে উঠার পর।
শেষ সময়: আসরের ওয়াক্তের পূর্ব পর্যন্ত।
যোহরের নামাজ মোট কয় রাকাত
অনেকে জানতে চান যোহরের নামাজ সর্বমোট কত রাকাত তাহলে তার উত্তর হল যোহরের নামাজের মোট ১২টি রাকাত পড়তে হয় যার মধ্যে সুন্ন্ত, ফরজ ও নফল নামাজ বিদ্যমান। সংক্ষেপে আমরা নিম্নরূপ বলতে পারি।
চার রাকাত সুন্নত
চার রাকাত ফরজ
দুই রাকাত সুন্নত
দুই রাকাত নফল
যোহরের নামাজ পড়ার নিয়ম
যোহরের চার রাকাত সুন্নাত নামাজের নিয়ম
মনে মনে নিয়ত করুন, “আমি আল্লাহর জন্য যোহরের চার রাকাত সুন্নাত মুকাদ্দা নামাজ পড়তে যাচ্ছি।” এরপর হাত তুলে "আল্লাহু আকবার" বলে নামাজ শুরু করুন।এরপরে সানা পড়ুন এবং বিসমিল্লাহ পড়ুন।
তারপর সূরা ফাতিহা পাঠ করুন এবং অন্য একটি সূরা মিলায় পড়ুন। এরপর "আল্লাহু আকবার" বলে রুকুতে যান এবং রুকুতে "সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম" তিনবার বলুন।রুকু থেকে উঠে সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা পাঠ করুন।
এরপর আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে এবং "সুবহানা রাব্বিয়াল আলা" তিনবার বলতে হবে। এভাবে দুটি সিজদা করুন। সিজদা থেকে উঠে এক রাকাত নামাজ শেষ হলো।
দ্বিতীয় রাকাতেও প্রথম রাকাতের মতো সূরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সূরা পড়ুন। এরপর রুকু ও সিজদা করুন।দ্বিতীয় রাকাতের শেষে বসে তাশাহুদ পড়ুন: "আত তাহিয়াতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত তইয়িবাতু..."
তৃতীয় রাকাত শুরু করে সূরা ফাতিহা পড়ুন।এরপর অন্য একটি সূরা, যেমন সূরা কাওসার, পড়ুন।এরপর একইভাবে রুকু ও সিজদা করুন।
চতুর্থ রাকাত সূরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সূরা পড়ুন।এরপর রুকু ও সিজদা করুন।দ্বিতীয় সিজদার পর শেষ বৈঠকে বসে তাশাহুদ, দরুদ শরিফ এবং দোয়া মাসুরা পড়ুন।
সবশেষে ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করুন: “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।”
এইভাবে যোহরের চার রাকাত সুন্নাত নামাজ সম্পন্ন করতে হয়।
যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম
যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ সুন্নত নামাজের মতই কিন্তু কিছু পার্থক্য আছে । এখন আমরা ফরজ নামাজ নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব।
মনে মনে নিয়ত করুন, “আমি আল্লাহর জন্য যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়তে যাচ্ছি।” এরপর হাত তুলে "আল্লাহু আকবার" বলে নামাজ শুরু করুন।তারপর বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে নাভির নিচে রেখে কিরাত শুরু করুন।
এখানে মনে রাখতে হবে যে ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাত সুন্নত নামাজের মতই আদায় করতে হবে অর্থাৎ সানা পড়ার পরে বিসমিল্লাহ সহকারে সূরা ফাতিহা ও একটি অন্য সূরা পাঠ করতে হবে। তারপর "আল্লাহু আকবার" বলে রুকুতে যেতে হবে এবং রুকুতে "সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম" তিনবার বলতে হবে। রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর পর একই নিয়মে সিজদায় যেতে হবে এবং "সুবহানা রাব্বিয়াল আলা" তিনবার বলতে হবে।
ফরজ নামাজের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে কোন সূরা মিলায়ে পড়ার দরকার নেই অর্থাৎ সূরা ফাতিহা পাঠ করার পরে রুকুতে যেতে হবে। এটাই হল ফরজ ও সুন্নত নামাজের নিয়মের পার্থক্য।
এইভাবে চার রাকাত ফরজ নামাজ সম্পন্ন করার পরে শেষ বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ ইব্রাহিম ও দোয়া মাসুরা পাঠ করে সালাম ফেরতে হবে ।
এখানে উল্লেখ্য যে আপনি যদি মসজিদে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করেন তাহলে আপনাকে ইমামকে ফলো করতে হবে এবং ওঠাবসা করতে হবে।আমরা সকলে জানি যে যে কোন ফরজ নামাজ মসজিদে ইমামের সাথে আদায় করায় নিয়ম।
যোহরের দুই রাকাত সুন্নাত নামাজের নিয়ম
যোহরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার জন্য আপনাকে মনে মনে নিয়ত করতে হবে, “আমি আল্লাহর জন্য যোহরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়তে যাচ্ছি।” এরপর হাত তুলে "আল্লাহু আকবার" বলে নামাজ শুরু করতে হবে।তারপর বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে নাভির নিচে রেখে একইভাবে পড়তে হবে।
প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে আরেকটি সূরা পড়ার পরে রুকু ও সিজদা করতে হবে এবং দ্বিতীয় রাকাতে একইভাবে সুরা ফাতেহা এবং আরেকটি সূরা পড়ার পরে রুকু সিজদা করে বৈঠকে বসতে হবে। এরপর তাশাহুদ, দরুদে ইব্রাহিম এবং দোয়া মাসুরা পাঠ করে সালাম ফেরাতে হবে যা পূর্বেই আলোচনা করা হয়েছে। এভাবে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করতে হবে।
যোহরের দুই রাকাত নফল নামাজের নিয়ম
জোহরের নফল নামাজ অন্যান্য নফল নামাজের মত একই নিয়মে আদায় করতে হবে। প্রথমে নফল নামাজের নিয়ত করে প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এরপর রুকু সিজদা করতে হবে।দ্বিতীয় রাকাতে একইভাবে সুরা ফাতেহা পাঠ করার পরে অন্য আরেকটি সূরা পড়তে হবে। এরপর তাশাহুদ, দরুদে ইব্রাহিম এবং দোয়া মাসুরা পাঠ করে সালাম ফেরাতে হবে।
যোহরের কসর নামায এর নিয়ম
আমরা জানি যে কসর নামাজের অর্থ হলো সংক্ষিপ্ত নামাজ যাহা ভ্রমণ কালে আদায় করতে হয়। কসর নামাজে কোন সুন্নত আদায় করতে হয় না অর্থাৎ দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করলেই হয়। মানে হল চার রাকাত ফরজ নামাজের স্থলে আপনি দুই রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করে সালাম ফিরাবেন। এভাবে জোহরের নামাজের কসর আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
কসর নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনি এই আর্টিকেলটি পাঠ করতে পারেন।
যোহরের নামাজের গুরুত্ব ও ফযিলত
যোহরের নামাজ ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ ইবাদত। এটি মুসলমানদের দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে দ্বিতীয় নামাজ এবং দিনের মধ্যভাগে আদায় করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে আধ্যাত্মিক সান্ত্বনা, আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সুযোগ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত। চলুন, যোহরের নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
যোহরের নামাজের গুরুত্ব
যোহরের নামাজের গুরুত্বের কিছু দিক নিম্নরূপ:
ফরজ ইবাদত: যোহরের নামাজ আল্লাহ কর্তৃক ফরজ করা হয়েছে, যা সকল প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক। এটি মুসলিমদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ এবং আল্লাহর আদেশ পালন করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
ইমানের শক্তি বৃদ্ধি: যোহরের নামাজ আমাদের ইমানের ভিত্তি শক্তিশালী করে। প্রতিদিন নিয়মিত এই নামাজ আদায় করার মাধ্যমে আমাদের আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়।
অপরাধ থেকে মুক্তি: ফরজ নামাজ আদায় না করা একটি গুরুতর পাপ, এবং যোহরের নামাজ প্রতিদিনের একটি ফরজ নামাজ হওয়ায়, এটি আদায় না করলে আমাদের জীবনে পাপের বোঝা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই সময়মতো যোহরের নামাজ আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মানসিক এবং শারীরিক শান্তি: যোহরের সময়টি দিনের ব্যস্ততম সময়। এই সময়ে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আমরা দৈনন্দিন চাপ থেকে মুক্তি পাই এবং মনকে শান্ত করতে পারি।
যোহরের নামাজের ফজিলত
যোহরের নামাজের ফজিলত অত্যন্ত মূল্যবান। এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছ থেকে বিশেষ রহমত, বরকত এবং পাপমুক্তি লাভ করতে পারি। কিছু বিশেষ ফজিলত নিচে উল্লেখ করা হলো:
গুনাহ মাফ হওয়া: যোহরের নামাজ আদায়ের মাধ্যমে ছোট ছোট গুনাহ মাফ হয়। আল্লাহ আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা করেন এবং আমাদের পবিত্র করেন।
বেহেশতের দরজা খোলা: হাদিসে উল্লেখ আছে, যিনি নিয়মিত যোহরের নামাজ আদায় করেন, আল্লাহ তাকে জান্নাতের একটি বিশেষ দরজা দিয়ে প্রবেশ করাবেন। তাই, যোহরের নামাজ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি মাধ্যম।
আল্লাহর নৈকট্য অর্জন: যোহরের নামাজের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর আরও কাছাকাছি আসার সুযোগ পাই। প্রতিদিন এই ইবাদত করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও ভক্তি প্রকাশ করতে পারি।
দোয়া কবুল হওয়ার সময়: যোহরের নামাজের পর দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এই সময়ে আল্লাহর কাছে নিজেদের জন্য, পরিবারের জন্য এবং সবার জন্য কল্যাণ কামনা করা উচিত।
অধিক সওয়াব: যোহরের নামাজের চার রাকাত সুন্নত ও ফরজ নামাজ আদায় করার মাধ্যমে আমরা অধিক সওয়াব লাভ করতে পারি। হাদিসে বলা হয়েছে, যারা নিয়মিত যোহরের নামাজ আদায় করেন, আল্লাহ তাদের উপর বিশেষ রহমত নাযিল করেন।
আখিরাতে নাজাত: যোহরের নামাজ আমাদের আখিরাতের মুক্তির পথ। যারা নিয়মিত যোহরের নামাজ আদায় করেন, তাদের জন্য কেয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকবে।
পরকালীন পুরস্কার: নিয়মিত যোহরের নামাজ আদায়ের ফলে পরকালে বিশেষ পুরস্কার এবং সওয়াব লাভ করা যায়। এটি আমাদের আখিরাতে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়ার একটি মাধ্যম।
প্রশ্নোত্তর পর্ব
১. যোহরের নামাজ কয় রাকাত, কি কি?
যোহরের নামাজে মোট ১২টি রাকাত পড়তে হয়। এগুলো হলো:
চার রাকাত সুন্নত মুকাদ্দা (ফরজের আগে পড়া হয়)
চার রাকাত ফরজ
দুই রাকাত সুন্নত মুয়াক্কাদা (ফরজের পরে পড়া হয়)
দুই রাকাত নফল (সুন্নতের পরে, ঐচ্ছিক)
মোট চারটি অংশে এই নামাজ আদায় করা হয়, যার মধ্যে প্রথম এবং দ্বিতীয় সুন্নত মুকাদ্দা ও সুন্নত মুয়াক্কাদা নামাজ আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
২. যোহরের রাকাত কয়টি?
যোহরের নামাজের মোট ১২টি রাকাত থাকে:
চার রাকাত সুন্নত
চার রাকাত ফরজ
দুই রাকাত সুন্নত
দুই রাকাত নফল
মুসলমানদের জন্য ফরজ ৪ রাকাত হলেও, সুন্নত ও নফলগুলো নামাজের পূর্ণতা আনার জন্য এবং এর মাধ্যমে আমরা অধিক সওয়াব লাভ করতে পারি।
৩. যোহরের নামাজ মসজিদে কিভাবে পড়তে হয়?
মসজিদে যোহরের নামাজ পড়ার নিয়ম নিম্নরূপ:
প্রথমে চার রাকাত সুন্নত মুকাদ্দা পড়ুন। নিয়ত করুন: “আমি আল্লাহর জন্য যোহরের চার রাকাত সুন্নত মুকাদ্দা নামাজ পড়তে যাচ্ছি।”
এরপর চার রাকাত ফরজ নামাজ জামাতের সাথে পড়ুন। ইমামের সাথে জামাতে ফরজ নামাজ পড়া অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। ফরজের নিয়ত করুন: “আমি আল্লাহর জন্য যোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়তে যাচ্ছি।”
ফরজের পরে দুই রাকাত সুন্নত মুয়াক্কাদা পড়ুন। এর নিয়ত হবে: “আমি আল্লাহর জন্য যোহরের দুই রাকাত সুন্নত মুয়াক্কাদা নামাজ পড়তে যাচ্ছি।”
সবশেষে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে পারেন, যা ঐচ্ছিক। তবে এতে অধিক সওয়াব পাওয়া যায়।
৪. চার রাকাত ফরজ নামাজ কিভাবে পড়তে হয়?
চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম হলো:
প্রথম রাকাত: নিয়ত করার পর "আল্লাহু আকবার" বলে নামাজ শুরু করুন। তারপর সূরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সূরা পড়ুন। এরপর রুকু এবং সিজদা করুন।
দ্বিতীয় রাকাত: আবার সূরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সূরা পড়ুন। এরপর রুকু এবং সিজদা করে দ্বিতীয় রাকাতের শেষে তাশাহুদ পড়ুন এবং উঠে পড়ুন।
তৃতীয় রাকাত: তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ুন। তারপর রুকু ও সিজদা করুন।
চতুর্থ রাকাত: সূরা ফাতিহা পড়ুন। রুকু ও সিজদা করে শেষে বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ শরিফ এবং দোয়া মাসুরা পড়ুন।
সবশেষে ডানে এবং বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করুন।
শেষ কথা
যোহরের নামাজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি শুধুমাত্র আল্লাহর ফরজ আদেশ পালনের একটি মাধ্যম নয়, বরং এটি আমাদের জীবনকে বরকতময় ও সঠিক পথে পরিচালিত করে। যোহরের নামাজের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সান্নিধ্যে আসতে পারি, জীবনে শান্তি ও তৃপ্তি অর্জন করতে পারি এবং পাপমুক্ত থাকতে পারি।
সুতরাং যোহরের নামাজের নিয়ম ও ফযিলত সম্পর্কে সচেতন হয়ে আমরা আমাদের জীবনকে আল্লাহর সান্নিধ্য আদায় করতে পারি। আশা করি, এই নিবন্ধটি পড়ে আপনি জোহরের নামাজের নিয়ম ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।আল্লাহ আমাদের সবাইকে নিয়মিত ও সঠিকভাবে যোহরের নামাজ আদায় করার তৌফিক দিন, আমিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url