দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য ১০টি ঘরোয়া উপায় জানুন

 প্রিয় পাঠক,আপনি কি জানতে চান দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য কি করা উচিত তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা আলোচনা করব ১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য কি করবেন।

১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য কি করা উচিত তা সম্পর্কে নিচে আপনাদের জন্য ধাপে ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। যার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজে দাউদ রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে ১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য কি করা উচিত সে সম্পর্কে জেনে নিন।

পেজ সূচিপত্রঃ ১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য

ভূমিকা

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি হল ১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য। দাউদ রোগের সাথে আপনারা প্রায় সকলেই পরিচিত। দাউদ একটি সংক্রামক চর্মরোগ। দাউদ হওয়ার কারণ হলো ত্বকের উপরের দিকে ছত্রাক সংক্রমণ। এই ছোঁয়াচে রোগটি ছত্রাক বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কারণে ঘটে। মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের যে কোন জায়গায় দাউদ হতে পারে।

দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নিলে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। দাউদের প্রধান উপসর্গ হলো ফুসকুড়ি। এই ফুসকুড়ি দেখতে সাধারণত আংটির মতো গোল হয়। রং হয় লালচে। তবে রোগীর ত্বকের বর্ণ ভেদে এটি রূপালীও দেখাতে পারে। আবার আশেপাশে ত্বকের চেয়ে গাঢ় বর্ণ ধারণ করতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নিন ১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য।

দাউদ রোগ থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন

১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য কি করা উচিত এর বিস্তারিত নিয়ে আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেল। সাধারণত অনেকেই দাউদের সমস্যায় ভোগেন। ভীষণ ছোঁয়াচে এই দাউদ ছড়িয়ে পড়ে একজন থেকে অন্য জনের মধ্যে।

আজকাল ডাক্তার দেখিয়ে দামি ওষুধ খেয়ে নিয়মিত মলম লাগিয়েও দাউদ রোগ থেকে মুক্ত পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু কিছু উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনারা দাউদ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

দাউদ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় গুলো হলো:
  1. সাবান পানির মাধ্যমে দাউদ দূর করা সম্ভব। প্রতিদিন আক্রান্ত স্থানে পানি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করুন। তারপর জায়গাটা আলতো হাতে মুছে নিন।
  2. নারকেল তেল মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল, উভয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান যা দাউদের সংক্রমণের চিকিৎসায় ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক। অন্তত দিনে তিনবার নারকেল তেল লাগালে দাউদ থেকে মুক্তি পাবেন।
  3. টি-ট্রি অয়েলে অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ছত্রাক জনিত ত্বকের ইনফেকশনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। যার ফলে এই তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে দাউদ রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
  4. হলুদের স্বাস্থ্য উপকারিতা অসীম। হলুদে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। তাছাড়া হলুদ কার্যকারী অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসেবেও কাজ করে। তাই হলুদ ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনারা দাউদ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
  5. দাউদের সংক্রমণ রোধ করতে অ্যালোভেরাও দুর্দান্ত কার্যকর। অ্যালোভেরা দাউদের চুলকানি, অস্বস্তি ও প্রদানের লক্ষণ গুলোকে প্রশমিত করতে সহায়তা করে। তাই অ্যালোভেরা ব্যবহারের মাধ্যমেও দাউদ রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

দাউদ রোগের আধুনিক চিকিৎসা কি

বর্তমান সময়ে দাউদ হচ্ছে একটি সাধারন সমস্যা। আগে অনেকেই ঘরোয়া উপায়ে দাউদের চিকিৎসা করতো। তবে বর্তমানে সময়ের সাথে সাথে দাউদের চিকিৎসা আধুনিক হয়ে উঠেছে। বর্তমানে বিভিন্ন রকম মলম, লোশন ও ক্রিম ব্যবহারের মাধ্যমে দাউদ রোগের চিকিৎসা করা যায়।

ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী আধুনিক চিকিৎসা গ্রহণ করার মাধ্যমে দাউদ থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। দাউদের জন্য অক্সিফান লোশন ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন নিয়মিত দিনে ২-৩ বার করে লাগালে দাউদ থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাবেন। এছাড়াও ফাঙ্গিট্যাক ক্রিম ব্যবহার করার মাধ্যমেও দাউদ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আবার অনেকেই চিকিৎসকের মতে ফাঙ্গিডাল ক্রিম ব্যবহার করে থাকে।

এগুলোর মাধ্যমে আপনারা খুব সহজে দাউদ রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এই ক্রিমগুলোর নিয়ম মতো অন্তত চার মাস ব্যবহার করতে হবে এবং দাউদ থেকে চিরতরে মুক্তি পেয়ে যাবেন। তাহলে বুঝতে পেরেছেন দাউদ রোগের আধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে। আর আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন ১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য।

১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য

দাউদ একটি ফাঙ্গাল ইনফেকশন। এটি শরীরের যেকোনো জায়গায় হতে পারে। দাউদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এটি ছোঁয়াচে। তাই দাউদ হলে দ্রুত চিকিৎসা নিন। দাউদের চিকিৎসার জন্য ঘরোয়া উপায় গুলো বেশ কার্যকর। যেগুলো সম্পর্কে আপনাদের জানা অত্যন্ত জরুরী।

১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য:
  1. ত্বকের যত্নে নারিকেল তেল যেমন উপকারী তেমনি চর্ম রোগের ক্ষেত্রেও এটি বেশ কার্যকর। প্রাকৃতিক এমন কিছু উপাদান আছে যা চর্মরোগ সারিয়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। নারিকেল তেল দাউদের জন্য উপকারী।
  2. দাউদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসাতে নিম পাতা খুবই কার্যকর। নিম পাতায় রয়েছে এন্টিসেপটিক ও এন্টিমাইক্রোবিয়াল প্রোপার্টিজ যা দাউদের মতো রোগ সারতে বেশ কার্যকর। দাউদের উপর বারবার নিমপাতা লাগালে দাউদ সেরে যায়।
  3. রসুনে রয়েছে এ্যাজুইনা নামে এন্টি-ফাঙ্গাল উপাদান যা ফাঙ্গাস ইনফেকশনে দারুণ কার্যকারী। রসুনের কয়েকটি কুয়া কুচিকুচি করে কেটে অথবা পেস্ট বানিয়ে দাওয়াতের উপর ব্যান্ডেজ করে বেঁধে দিন। এভাবে সারারাত রাখেন। দাউদ আপনিই সেরে যাবে।
  4. এন্টিইনফ্লামেটরি ও এন্টি ফাঙ্গাল উপাদান সমৃদ্ধ তুলসী পাতা দাউদের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়াকে রোধ করে। তুলসী পাতা বেটে দাউদ এবং চুলকানিতে লাগিয়ে দিলে এ ধরনের চর্মরোগ থাকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  5. দাউদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসাতে পেঁপে নিয়মিত ব্যবহারে বেশ উপকার আছে। পেঁপেতে রয়েছে এন্টি-ফাঙ্গাল প্রপারটিজ যা দাউদ ঠিক করতে সাহায্য করে।
  6. দাউদ চুলকানি দূর করার উপায় হিসেবে হলুদ অত্যন্ত কার্যকারী। হলুদে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান সরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  7. দাউদ এর প্রকোপ কমাতে সরষে বীজের বিকল্প নেই। দাউদের চিকিৎসা করতে সরষে বীজ দারুন কাজে আসে। সরষে বীজ বেটে তার পেস্ট দাউদ এর জায়গায় লাগালে দাউদ ভালো হয়ে যাবে।
  8. এলোভেরা শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নয়, যে কোন চর্ম রোগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর। প্রতিদিন রাতে শোয়ার পূর্বে এলোভেরা পাতা থেকে পরিমাণ মতো জেল বের করে দাউদের উপর লাগিয়ে রাখবেন। চিকিৎসাটি প্রতিদিন করলে দাউদ রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
  9. চুলকানি দূর করার উপায় হিসেবে মধু বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এক টুকরো তুলা এ অল্প একটু মধু নিয়ে আক্রান্ত স্থানে দিন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে দাউদ থেকে সহজে মুক্তি পাবেন।
  10. দাউদের মতো চর্ম রোগের ক্ষেত্রে ভিনেগার অত্যন্ত উপকারী উপাদান। পরিমাণ মত ভিনেগার নিয়ে এর মধ্যে সামান্য পরিমাণ লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর মিশ্রণটি দাউদের উপর লাগিয়ে পাঁচ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতিটি এক সপ্তাহ ব্যবহার করলে দাউদ সেরে যাবে।
আশা করি তাহলে বুঝতে পেরেছেন ১০টি ঘরোয়া উপায় দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য যেগুলো বেশ কার্যকারী।

কিভাবে বুঝবেন আপনার দাউদ হয়েছে

দাউদ রোগের প্রধান উপসর্গ হলো ফুসকুড়ি। এই ফুসকুড়ি দেখতে সাধারণত আংটির মতো গোল হয়ে থাকে। রং হয় লালচে। তবে রোগের ত্বকের বর্ণ ভেদে এটি রূপালী দেখাতে পারে। আবার আশেপাশে ত্বকের চেয়ে গাঢ় বর্ণ ধারণ করতে পারে। দাউদ রোগে ত্বকের বর্ণ পরিবর্তনের পাশাপাশি ফুসকুড়ির উপরিভাগে ছোট ছোট আইশ থাকতে পারে। আরো বিভিন্ন কারনে বুঝতে পারবেন আপনার দাউদ হয়েছে।

কারণ যেই জায়গায় দাউদ হয় সেই জায়গায় গোল হয়ে থাকে। আবার ওই জায়গায় চুলকানির মত হয়ে যায়। সব সময় চুলকাতে থাকে। আক্রান্ত ত্বকের উপর চুল অথবা লোম থাকলে সেগুলো পড়ে যাওয়া। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দাউদ হতে পারে। উপরিউক্ত কারণগুলোর মাধ্যমে বুঝতে পারবেন যে আপনার দাউদ হয়েছে।

দাউদ হয়েছে তা বোঝার লক্ষণ

বিভিন্ন কারণে দাউদ হতে পারে। দাউদ হচ্ছে একটি ছোঁয়াচে রোগ। দাউদ একজনের শরীর থেকে অন্য জনের শরীরে খুব সহজেই ছড়িয়ে যায়। তাই দাউদ হওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। শরীরের যদি কোন জায়গায় দেখতে পান আংটির মত দেখতে হয়ে আছে এবং ফুঁসকুড়ি তাহলে বুঝবেন দাউদ রোগ হয়েছে। আর দাউদের রং সাধারণত লালচে হয়।

তবে এটি নির্ভর করে রোগীর শরীরে ত্বকের উপর। ত্বকের ওপর নির্ভর করেও দাউদের রং হয়ে থাকে। অনেক সময় রোগী ত্বকের জন্য দাউদ সোনালী রং হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় আশেপাশে ত্বকের চেয়ে গাঢ় বর্ণ ধারণ করতে পারে। দাউদ রোগে ত্বকের বর্ণ পরিবর্তনের পাশাপাশি ফুসকুরের উপরে ভাগে ছোট ছোট আইশ মতো দেখা যেতে পারে। আরো বিভিন্ন লক্ষণ রয়েছে দাউদ হয়েছে কিনা তা বোঝার।

দাউদের লক্ষণ গুলো হল:
  1. ত্বক কিছুটা খসখসে বা শুকনো হয়ে যাওয়া।
  2. স্থানটি ফুলে যাওয়া
  3. চুলকানি হওয়া
  4. আক্রান্ত ত্বকের উপরে চুল অথবা লোম থাকলে সেগুলো পড়ে যাওয়া

উপসংহার

দাউদ হল সাধারণত ছোঁয়াচে রোগ। আর এই দাউদ রোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তবে কিছু কিছু লক্ষণের মাধ্যমে খুব সহজে বোঝা যায় দাউদ হয়েছে কিনা। আর দাউদ হলে খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসা নেওয়া উচিত। কারণ দাউদ একজন থেকে আরেকজনের কাছে খুব সহজেই ছড়িয়ে যায়। তাই পরিবারের একজনের হলে অন্যজনেরও হয়ে যেতে পারে। দাউদ হওয়ার সাথে সাথে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

কারণ দাউদের জায়গা থেকে ইনফেকশন হতে পারে। কারো অতিরিক্ত পরিমাণে দাউদ হলে ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উচিত। উপরের উপায় গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজে দাউদ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাহলে বুঝতে পেরেছেন দাউদ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে।

আশা করি তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ার পর আপ নারা দাউদ রোগের চিকিৎসার জন্য কি করা উচিত তা বুঝতে পেরেছেন।

এরকম সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আর্টিকেলটি আপনাদের বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতদের সাথে বেশি বেশি করে শেয়ার করুন। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url